জন্মভূমি রিপোর্ট : মুখ ও চোখ বেধে রাতভর গণধর্ষনের পর হত্যার চেষ্টার অভিযোগে মোংলা থানায় ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বাশতলা গ্রামে একটি চিংড়ী ঘেরে এ ঘটনা ঘটেছে। এর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী জানায়, সোমবার রাত ৮টার দিকে দোকানে ওষুধ কিনতে গেলে মোংলা শহরতলীর কলেজের সামনের রাস্তা থেকে এক কিশোরীকে মোটর সাইকেল যোগে তুলে নিয়ে যায় অভিযুক্ত দুই যুবক। উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বাঁশতলা এলাকায় একটি চিংড়ি ঘেরের ঘরে অভিযুক্তরা ছাড়া আরো কয়েকজন মিলে চোখ মুখ বেধে রাতভর গণধর্ষণ করে ওই ঘরেই আটকে রাখে। এসময় বাঁচার জন্য আকুতি জানালে ওই কিশোরীকে মারধরও করা হয় বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
পরে মঙ্গলবার গভীর রাতে হত্যার উদ্দেশ্যে গাড়ী থেকে তাকে মিঠাখালীর মৌখালী ব্রিজের পাশে ফেলে যায় অভিযুক্তরা বলে জানায় ভুক্তভোগী ওই কিশোরী ও তার স্বজনরা। পরে পথচারী ও স্থানীয়রা গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
অভিযোগ পেয়ে মোংলা থানা পুলিশ মঙ্গলবার রাতভর অভিযান চালিয়ে মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বাঁশতলা গ্রামের মনিরুল ফকিরের ছেলে রুমান ফকির (২৫), ওলি শেখের ছেলে রানা শেখ (২৪), তায়জিদ খানের ছেলে মোঃ সুমন (২৯), বাশার মোছাল্লীর ছেলে মিজানুর মোছাল্লী (৩৫) ও চিলা ইউনিয়নের হলদিবুনিয়া পঙ্গুর মোড় এলাকার মৃত চানমিয়া শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২২) কে আটক করা হয়েছে। মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে মোঃ জামাল (৪৫) এবং মোঃ লুৎফরের ছেলে মোঃ আওয়াল (৩৫) পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে বলেও জানায় পুলিশ।
আজ বুধবার (০৫ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনায় ৭ জনের বিরুদ্ধে গণ ধর্ষণের মামলা রেকর্ড শেষে গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে মোংলা থানা। যার মামলা নং-০৬। ভুক্তভোগী ওই নারীকে ডাক্তারী পরিক্ষার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং চিকিৎসার জন্য খুলনায় পাঠানো হবে বলে জানায় পুলিশ। অভিযুক্তরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ এম আজিজুল ইসলাম বলেন, মোংলা তুলে নিয়ে চিংড়ীর ঘেরের একটি ঘরে গণধর্ষনের ঘটনায় মোংলা থানায় ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে বুধবার রাতভর অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে আটক করতে সক্ষম হয় মোংলা থানা পুলিশ। বুধবার দুপুরের পর তাদের বাগেরহাট আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে এবং বাকি দুই আসামীকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানায় পুলিশের এ কর্মকর্তা।