মিজানুর রহমান, মোরেলগঞ্জ : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পানগুছি নদীর ভাঙ্গন দিনদিন বেড়ে চলছে। নদীর দুই পাড়ে পৌরসভা বিস্তৃত থাকায় পৌরসভার ৬টি ওয়ার্ডের কমপক্ষে ২০০০ পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছেন। এর মধ্যে ১নং ওয়ার্ডের ফেরিঘাট সংলগ্ন বারইখালী এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৬০০। জোয়ারের সময় এসব পরিবারের সদস্যরা রান্না, খাওয়া ভুলে যুদ্ধ করেন পানির সাথে। একটানা পায়লিং না থাকার কারণে বারইখালী, ফেরিঘাট এলাকা, কুঠিবাড়ি, লঞ্চঘাট এলাকা, শানকিভাঙ্গা, সোলমবাড়িয়া এলাকার কমপক্ষে ২ হাজার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছেন। ভাঙনে বারইখালী এলাকার দুই কিলোমিটার সিসি ঢালাই সড়ক নদীতে চলে যাওয়ায় স্থানীয়দের স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
ভাঙ্গন কবলীত এ উপজেলার প্রাণকেন্দ্র মোরেলগঞ্জ সদর বাজার ও পৌরসভা রক্ষার জন্য ইতোমধ্যে নদীর পশ্চিম পাড়ে কিছু এলাকায় ব্লক পায়লিয়ং করা হয়েছে। তবে গোটা শহরটি পায়লিংয়ের আওতায় না আসায় ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা পৌরসভার কোন স্থাপনা। বসতবাড়ি, জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও দোকানপাট, নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। কয়েকটি স্থানে ব্লক পাইলিং ধ্বসে পড়েছে। একটু জোঁয়ার হলেই শহরে পানি ঢুকছে। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। কয়েক যুগ ধরে পানগুছির ভাঙনে সর্বশাস্ত হয়েছে কয়েক হাজার পরিবার। নদী পাশর্^বর্তী পৌরবাসির দুঃখ এখন পানগুছির ভাঙ্গন।
সম্প্রতি পানগুছি নদীতে নতুন করে একটি প্রকল্পে ‘নদীর তীর প্রতিরক্ষা’ কাজ শুরু হয়েছে। তবে এ কাজটি মূল শহর এলাকা থেকে শুরু না করে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ফুলহাতা এলাকা থেকে শুরু করায় জনমনে ক্ষাভের সৃষ্টি হয়েছে।
পৌরসভা মেয়র এসএম মনিরুল হক তালুকদার বলেন, পানগুছি নদীর ভাঙনে মূল শহরের চার ভাগের এক ভাগ এখন অবশিষ্ট আছে। শতশত বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও সদর বাজারের বেশিরভাগ নদীগর্ভে চলে গেছে। তবে শীঘ্রই পানগুছি নদীর পশ্চিম পাঁড় থেকে মূল শহরের ভাঙ্গন সুরক্ষা কাজ শুরু হবে।
এ বিষয়ে পানিউন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাট জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, নতুন টেন্ডার হয়েছে, ঠিকাদারও পাওয়া গেছে। মোরেলগঞ্জ পৌর এলাকার নদীর তীর প্রতিরক্ষার কাজ বর্ষা মৌসুম শেষ হলেই পুরোদমে শুরু হবে।