যশোর অফিস : যশোরে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু বাজারে এখনই নতুন গুড়-পাটালি বিক্রি হচ্ছে। এসব গুড় চিটা গুড় ও চিনির মিশ্রণে তৈরি হচ্ছে। এতে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর হাইড্রোজও মেশানো হচ্ছে।
যশোরের বড় বাজারের গুড়পট্টি ও হাটখোলা রোডে গিয়ে দেখা যায়, দেদারছে বিক্রি হচ্ছে “নতুন’ পাটালি ও গুড়। বিক্রেতারা জানান, ছাতিয়ানতলা বাজার থেকে তারা এসব গুড় কিনেছেন। কিন্তু ছাতিয়ানতলা বাজারে গুড়ের হাট হয় গত বৃহস্পতিবার ও শনিবার ভোরে গিয়ে দেখা যায়, হাটে মাত্র একজন গাছি ৪/৫ কেজি গুড় এনেছিলেন। অন্য গাছিরা এখনও রস সংগ্রহ শুরু করেননি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তালবাড়িয়া গ্রামে যশোর বড় বাজরের গুড় ব্যবসায়ী সুমনের বাড়িতে হাজির হলেই বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। লাল পর্দার আড়ালেই যেন চলছে তার গোপন কারবার। বাড়ির ওঠানে দেখা যায় চুলা, তার পাশেই চিটা গুড়ের টিনের স্তুপ। অন্য পাশে গুড়ের শ’শ খালি টিন। ওই রাতেই যে গুড় জালানো হয়েছে তা স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছে।
সুমন গুড় তৈরী করার কথা স্বীকার করে বলেন তিনি আখের গুড় জ্বালান। কিন্তু স্থানীয় গাছিরা জানান, সুমনই যশোরের গুড় সিন্ডিকেটের প্রধান হোতা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিজ বাড়িতেই চিটা গুড়ের কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন। অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানেই তিনি আঙুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছেন। ওই এলাকায় একাধিক জমি কিনেছেন তিনি। এছাড়া অপকর্ম ঢাকতে তিনি রাজনৈতিক লেবাস ধারণ করেছেন।
যশোরের নিরাপদ খাদ্য কমকর্তা নাজমুস সুলতানা সীমা সাংবাদিকদের জানান, গতবছর যশোরের গুড় ও পাটালিতে হাইড্রোজের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, হাইড্রোজ মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
যশোরে ভেজাল খেজুর গুড়ের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এতে এলাকার খেজুর চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পাশাপাশি ভোক্তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। প্রশাসনের উচিত এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।#