জন্মভূমি ডেস্ক
ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নির্মিত বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট এবং রূপসা রেলসেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী। এ সময় আরো ৩টি প্রকল্প উদ্বোধন করেন দুই দেশের সরকারপ্রধান। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কনসেশনাল ফাইন্যান্সিং স্কিমের অধীনে ভারতীয় উন্নয়ন সহায়তা হিসাবে ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারসহ প্রায় দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করা হচ্ছে।
উদ্বোধন করা ৫টি প্রকল্প হলো :
১. মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্টের (রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প) ইউনিট-১।
২. খুলনার রূপসা রেলসেতু।
৩. বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগের ২৫টি প্যাকেজে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ও নির্মাণ সরঞ্জাম এবং যন্ত্রপাতি সরবরাহ।
৪. খুলনা দর্শনা রেললাইন সংযোগ প্রকল্প।
৫. পার্বতীপুর-কাউনিয়া মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েল গেজ লাইন রূপান্তর প্রকল্প।
মঙ্গলবার দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে বাংলাদেশের বৃহৎ এ দুটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন দুই দেশের সরকারপ্রধান।
১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ ব্যয়ের দেড়শ কোটি ডলারের বড় অংশের জোগান দিচ্ছে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। প্রকল্পটির কাগুজে নাম ‘মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট’।
ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস (বিএইচইএল) এই নির্মাণ কাজ করছে। দেশটির এনটিপিসি লিমিটেড ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের মধ্যে আধাআধি অংশীদারিত্বে এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে।
কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকিতে ফেলবে বলে তার বিরোধিতা করে আসছে পরিবেশবাদীরা।
তবে বাংলাদেশে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সুন্দরবন রক্ষায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে, যাতে পরিবেশের ক্ষতি ন্যূনতম মাত্রায় রাখা হবে।
অন্যদিকে খুলনা থেকে মোংলার পথে রূপসা নদীতে রেলসেতু নির্মাণের কাজ এ বছরের জুলাইয়ে শেষ হয়েছে।
সংযোগ রেললাইনসহ এই সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার হলেও মূল রেলসেতুর দৈর্ঘ্য ৭১৬ মিটার।
স্টিলের তৈরি এ সেতুর নির্মাণসামগ্রী ভারত থেকে সড়ক, সমুদ্র ও অভ্যন্তরীণ নদীপথে আমদানি করা হয়েছিল।
ভারত সরকারের ঋণে নির্মিত এই সেতুর ফলে খুলনা থেকে মোংলার পথে পণ্য পরিবহনে বেশ সুবিধা মিলবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চার দিনের ভারত সফরে মঙ্গলবার দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি প্রকল্প চালুর ঘোষণা দেওয়া হল।
কুশিয়ারার নদীর পানি প্রত্যাহার, রেলের আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মহাকাশ গবেষণাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা এগিয়ে নিতে সাতটি সমঝোতা স্মারকও সই হয় এদিন। উভয় দেশের কর্মকর্তারা এসব সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
এছাড়া বাংলাদেশের সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের জন্য নির্মাণ সামগ্রী ও যন্ত্রপাতি হস্তান্তর, খুলনা-দর্শনা রেলপথ এবং পার্বতীপুর-দর্শনা রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পেরও উদ্বোধন ঘোষণা করেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ও রূপসা রেলসেতু উদ্বোধন করলেন মোদী ও হাসিনা
Leave a comment