জন্মভূমি রিপোর্ট
রূপসা উপজেলার পৃথক চারটি এলাকায় পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কাঠ পুড়িয়ে কয়লা বানানোর ২৬ টি চুল্লি ধ্বংস করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর, খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের ভ্রাম্যমান আদালত মঙ্গলবার দিনব্যাপী এ অভিযান পরিচালনা করেন। তখন চুল্লিগুলোর মালিক ও কর্মচারীরা পলাতক ছিল। যে কারণে তারা শাস্তির আওতায় আসে নি।
মোবাইল কোর্টে নেতৃত্বদানকারী ম্যাজিস্ট্রেট মাশরুবা ফেরদৌস দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, সকাল ১০ টা থেকে শুরু হওয়া অভিযান বিকেল চার টা পর্যন্ত চলে। তখন টিএস বাহিরদিয়া ইউনিয়নের তালতলা শ্বসান ঘাট এলাকায় দু’টি, শ্রীফলতলা ইউনিয়নের চর মোছাব্বারপুর গ্রামে তিনটি, আইচগাতী ইউনিয়নের যুগিহাটী আমিনীয়া মাদ্রসা সংলগ্ন এলাকায় পাঁচটি ও পুটিমারী বিলের ফসলী জমির মঝে গড়ে ওঠা ১৬ টি চুল্লি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়। অভিযানে অংশ নেয়া ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আশ-পাশের জলাশয়ের পানি দিয়ে চুল্লিগুলোর আগুন নেভান। এরপর শ্রমিকরা হামার দিয়ে পিটিয়ে চুল্লির ইটের গাথুনি ভেঙ্গে দেন। রূপসা থানা পুলিশের একটি টিম অভিযানে সহযোগিতা করেন।
সূত্র জানান, গত প্রায় তিন মাস আগে পুটিমারী বিল এলাকার এবং যুগিহাটী মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় বিআইডবিøউটিএ’র সম্পত্তি দখল করে গড়ে ওঠা চুল্লিগুলো ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু অসাধু কারবারীরা আবারও সেখানে চুল্লি তৈরি করে কাঠ পোড়ানো শুরু করে। চুল্লির ঝাঝালো ধোঁয়ায় সেখানকার মানুষ চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছিলেন। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুসারে দুবৃত্বদের অনধিক দু’ বছর কারাদÐ এবং দু’ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদÐ করার বিধান রয়েছে।
ইটের গাথুনি ও কাদা-মাটির প্রলেপে তৈরি একেকটি চুল্লি তৈরিতে খরচ মাত্র ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। কাঠের দর প্রতি মন একশ থেকে দেড়শ টাকার মধ্যে। কাঠ পোড়ানোর কাজে নিয়োজিত শ্রমিকের মজুরিও সস্তা। বিনিয়োগের তুলনায় মোটা দাগের লাভ হওয়ায় অভিযানের পর আবারও অসাধু লোকেরা অবৈধ কারবারে জড়াচ্ছেন। প্রতিবারে একেকটি চুল্লিতে কাঠের ধারন ক্ষমতা ১২শ’ থেকে ১৪শ’ মন। চুল্লির খোরাক যোগাতে গ্রামাঞ্চলের কাঠ ব্যবসায়ীরা নির্বিচারে ফলজ ও বনজ গাছ উজাড় করছেন। বাদ দিচ্ছেন না-ঔষধী গাছও। ধোঁয়াচ্ছন্ন পরিবেশে বিরক্তিতে থাকা কয়েকজন এবং চুল্লিতে কাজ করা শ্রমিকদের কাছ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।