শেখ মোহাম্মদ আলী, শরণখোলা
শরণখোলাসহ আশেপাশের উপজেলায় অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট নির্মাণ অব্যাহত থাকায় ক্রমান্বয়ে কমছে আবাদী ফসলের জমি। জনসংখ্যাবৃদ্ধি, বছর বছর একান্নবর্তী পরিবার ভেঙ্গে আলাদা হওয়ায় স্থান সংকুলানের অভাব এবং অন্যান্য প্রয়োজনের তাগিদে মানুষজন ফসলের জমি নষ্ট করে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ইটভাটা নির্মাণ করছে। প্রতি বছর উপজেলায় ১/২ হেক্টর করে আবাদী জমি কমছে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোন আইন মানা হচ্ছেনা।
সরেজমিনে গ্রামাঞ্চল ঘুরে মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছর পরিবারে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় একান্নবর্তী পরিবার ভেঙ্গে আলাদা হয়ে যায়। প্রয়োজনের তাগিদে বাধ্য হয়েই বিকল্প জমি না থাকায় ফসলের জমিতে তারা বাড়িঘর নির্মাণ করছে। অনেকক্ষেত্রে ফসলের জমি, মাঠঘাট, ছোটখাল, ডোবা, পুকুর ভরাট করে মার্কেট ও ইটভাটা, পেট্রোলপাম্প, ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে। বছর ঘুরে গেলেই ফসলের জমিতে একেকটি নতুন গ্রাম পাড়া মহল্লা গড়ে উঠছে। গত ৩/৪ বছরের মধ্যে উপজেলা সদরের কদমতলা গ্রামের কয়েক হাজার একরের ফসলের মাঠ প্রায় পুরোটাই এখন নতুন একটি গ্রামে পরিণত হয়েছে সেখানে বড় বড় দালান ও বাড়িঘর নির্মাণ হয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার সর্বত্র শত শত প্রবাসী চড়া দামে কৃষকের ফসলের জমি কিনে বালু ভরাট করে ইমারত নির্মাণ করছে। এ ছাড়া বাগেরহাট–মোরেলগঞ্জ–শরণখোলা আঞ্চলিক মহাসড়কের দু‘পাশে ফসলের জমিতে শত শত বাড়িঘর, স্থাপনা ও মাছের খামার গড়ে উঠেছে। প্রতি বছর ফসলের জমিতে বাড়িঘরসহ মাছের খামার ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের কারণে আগামীতে ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন কমে যাওয়ার আশংকায় এলাকাবাসীরা উদ্বিগ্ন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক ইউপি সদস্য হেমায়েত উদ্দিন বাদশা বলেন, ফসলের জমিতে বাড়িঘর নির্মাণের প্রবনতা এখনই ঠেকানোসহ বিদ্ধমান বাড়িঘর নির্মাণের সরকারি নীতিমালা বাস্তবায়নে প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। শরণখোলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌমিত্র সরকার বলেন, শরণখোলায় আবাদী জমির পরিমাণ ১০ হাজার হেক্টর। বাড়িঘর নির্মাণের ফলে প্রতি বছর ১/২ হেক্টর করে ফসলের জমি কমছে ফলে এর প্রভাব বাৎসরিক ফসল উৎপাদনের উপর পড়ছে। বাড়িঘর নির্মাণের নীতিমালা কার্যকর করার বিষয়টি আগামী উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় তিনি তুলবেন বলেও জানান।