জন্মভূমি ডেস্ক : বাগেরহাটের শরণখোলায় পুলিশের এক এসআইর বিরুদ্ধে মোঃ বিল্লাল শিকদার (২৭) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। পরিকল্পিতভাবে ইয়াবা দিয়ে ফাসিয়ে মামলা দায়ের পূর্বক কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে দাবি এলাকাবাসী ও পরিবারের। দ্রুততম সময়ে সঠিক তদন্ত করে মিথ্যা মামলা থেকে মোঃ বিল্লাল শিকদারকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। কারাগারে থাকা মোঃ বিল্লাল শিকদার শরণখোলা উপজেলার রতিয়া রাজাপুর এলাকার ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মাছ ব্যবসায়ী ইউনুস শিকদারের ছেলে।
শরণখোলা থানায় মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৩ জানুয়ারি দুপুর ২ টায় রতিয়া রাজাপুর এলাকার সরকারী পুকুর পাড়ে পাকা রাস্তার উপর থেকে বেকারি ব্যবসায়ী মোঃ মিজান হাওলাদার ও স্থানীয় মোঃ আলমগীর আকনের উপস্থিতিতে মোঃ বিল্লাল শিকদারকে আটক করা হয়। তার প্যান্টের পকেট থেকে সাদা পলিথিনে মোড়ানো ১০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়, যার মূল্য ৫ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ৪ জানুয়ারি বিল্লালকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
স্থানীয়দের দাবি, মোঃ বিল্লাল শিকদার একজন নিরীহ মাছ ব্যবসায়ী। তিনি মাদকের সাথে জড়িত নয়। একটি চক্র পুলিশকে ম্যানেজ করে তাকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়েছে।
রাস্তার পাশে দাড়িয়ে পুরো ঘটনা স্বচোক্ষে দেখা ষাটোর্ধ বৃদ্ধ আয়েশা বেগম বলেন, দেখলাম দুইজন সাদা পোশাকের অপরিচিত লোক মোটরসাইকেল থেকে নামল। একজন নিজের পকেট থেকে কি যেন পুকুরের মধ্যে ফেললেন। এরপরেই একটা চেন (হাতকড়া) লাগিয়ে পোলাডারে (মোঃ বিল্লাল শিকদার) ধরে নিয়ে আসল, আর বলে তুই গাজা পুকুরে ফেলালি কেন। আর পোলাডা বলতেছে, আমি কোন গাজা ফেলিনি। পুলিশটা গালিগালাজ করে, বুট জুতা দিয়ে পোলাডার পায়ের উপর আঘাত করতেছে এবং জোরে জোরে বলতেছে তুই ফেলাইছো, তোরে মাইরা ফেলাব। একপর্যায়ে মারতে মারতে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে গেল। আমিতো নিজের চোখে দেখেছি, পুলিশ নিজের পকেট থেকে কি যেন বের করে পুকুরের মধ্যে ফেলেছে। সঠিক বিচার হওয়া দরকার।
এজাহারে উল্লেখিত সাক্ষী বেকারি ব্যবসায়ী মোঃ মিজান হাওলাদার বলেন, মোঃ বিল্লাল শিকদারকে কখন কিভাবে আটক করেছে তার কিছুই জানিনা। সিভিল পোশাকে দুইজন পুলিশ এসে আমাকে ডেকে আমার নাম ঠিকানা লিখে একটা কাগজে সই নিয়েছে। বলে এখান থেকে মাদক ধরেছি, পকেট থেকে বের করে তিনপিস ট্যাবলেট দেখালো। পরে রাতে ফোন দিয়ে আমার মায়ের নাম নিয়েছে এবং বলেছেন আমাকে মাদক মামলায় সাক্ষী রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানিনা।
অপর সাক্ষী রতিয়া রাজাপুর এলাকার মোঃ আলমগীর আকন বলেন, পুলিশ হচ্ছে তার পকেট থেকে দুই পিস ট্যাবলেট বের করে আমাকে দেখাইছে এবং আমার নাম লিখেছে। মোবাইলে বিল্লালের ছবি দেখাইয়া বলেছে একে চেনেন নাকি, বলেছি চিনি সেতো ভাল ছেলে। যদি বলত আমাকে সাক্ষী দেবে, তাহলে আমি নাম ঠিকানাও দিতাম না। পরে ফোন করে আমাকে বলেছে সাক্ষী দিতে হবে। আসলে বিল্লালকে ধরা ও মাদক উদ্ধারের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। এছাড়া বিল্লাল ভাল ছেলে।
ধানসাগর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম পিঞ্জু বলেন, বিল্লালের বাবা সাগরে ব্যবসা করেন। শত্রু-মিত্র আছে, হয়ত তার ব্যবসা ধ্বংস করার জন্য তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রাসেলুর রহমান বলেন, আমরা এ ধরণের কোন অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।