খুলনা পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলন
জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় কাজিবাচা নদী থেকে উদ্ধার ইজিবাইক চালক শাওন হাওলাদার হত্যার নৃশংস ঘটনা জানালো পুলিশ। প্রথমে গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা হয়েছে মনে করে নদীর তীরে ফেলে দেয়। হাত-পা নড়াচড়ার কারণে পরে হত্যা নিশ্চিত করতে পানির নীচে ডুবিয়ে ধরে। হত্যার পর শাওনের পকেট থেকে ২৬০ টাকা ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। পরে শাওনের ইজিবাইকটি চালিয়ে তারা পালিয়ে যায়। ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় চার আসামীর তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অপরজন এখনও পলাতক রয়েছে। ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হলেও ইজিবাইকটি গত চার দিনেও উদ্ধার করা যায়নি।
খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ সাঈদুর রহমান গতকাল তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন। লিখিত বক্তব্য পাঠকালে তিনি বলেন, গত ২৬ আগস্ট বেলা তিনটায় শাওন হাওলাদার ওরপে বাবু তার খালিশপুরের ভাড়া বাসা থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়। রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাড়ি না ফেরায় তার পরিবারের লোকজন ফোনে কথা বলার চেষ্টা করে। তখন ফোন বন্ধ পাওয়ায় তাদের মধ্যে দুশ্চিন্তা দেখা দেয়। পরের দিন ২৭ আগস্ট বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বটিয়াঘাটা উপজেলার ডেউয়াতলা গ্রামের শ্মশানঘাটের পাশে কাজিবাচা নদী থেকে শাওনের ভাসমান লাশ উদ্ধার হয়। তার পিতা সেলিম হাওলাদারসহ পরিবারের লোকজন থানায় এসে লাশ শনাক্ত করেন। ওই রাতে শাওনের পিতা অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২৯ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে দাকোপ উপজেলার গুনারী গ্রামের মৃত হোসেন গাজীর পুত্র মোসলেম গাজী (৫৪)কে হরিণটানা থানা এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তার নিকট থেকে শাওন হাওলাদারের ‘লাভা’ মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই তারিখ রাত সাড়ে দশটার দিকে রূপসা ব্রিজের নীচ হতে একই গুনারী গ্রামের ইউসুফ আলী সরদারের পুত্র আনিছুর রহমান (৪২) গ্রেফতার হয়। উভয়ের দেয়া তথ্য মতে রাত সোয়া এগারটার দিকে কয়রা থানার মহেশ^রীপুর গ্রামের আমীর সরদারের পুত্র রুহুল আমীন (৪০) খুলনা নগরীর নতুন বাজার চর স্কুল গলি থেকে গ্রেফতার হয়।
তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে নগরীর শিববাড়ী মোড় থেকে ২৬ আগস্ট দাকোপ উপজেলার পানখালী যাবার কথা বলে ৬০০ টাকায় তারা চারজনে শাওনের ইজিবাইক ভাড়া করে। রাত সাড়ে আটটার দিকে ডেউয়াতলা শ্মশান ঘাটের কাছে এসে ইজিবাইকটি দাঁড়াতে বলে। আসামীরা চারজন নদীর পাড়ে যায়। তাদের ফিরে আসতে দেরী দেখে শাওন নদীর পাড়ে ডাকতে যায়। এসময় পূর্বপরিকল্পিত ভাবে একজন প্যান্টের বেল্ট খুলে শাওনের গলায় পেঁচিয়ে ধরে। তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে নদীর চরে ফেলে দেয়। এসময় শাওন মৃত্যু যন্ত্রনায় হাত পা নাড়াতে থাকলে আসামীরা তাকে টেনে নদীর পানিতে ফেলে ডুবিয়ে ধরে। পরে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।