জন্মভূমি ডেস্ক : হাঙ্গেরিতে শিশুকে যৌন নির্যাতনে জড়িত এক ব্যক্তিতে ক্ষমা করে সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেছেন প্রেসিডেন্ট কাতালিন নোভাক। গতকাল শনিবার টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
ভাষণে কাতালিন নোভাক বলেন, ‘গত এপ্রিলে আমি ক্ষমা (শিশুর যৌন নির্যাতনকারীকে) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি বিশ্বাস করেছিলাম যে, দোষী ব্যক্তি তার তত্ত্বাবধানে থাকা শিশুদের দুর্বলতাকে কাজে লাগায়নি।’
নিজের ভুল স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি ভুল করেছি কারণ, পেডোফিলিয়ার (শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করা) প্রতি সরকারের জিরো টলারেন্স সম্পর্কে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি করেছে এই যুক্তিহীন ক্ষমা।’
রয়টার্স বলেছে, ২০২৩ সালের এপ্রিলে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে প্রায় দুই ডজন ব্যক্তিকে ক্ষমা করেছিলেন নোভাক। তবে বিষয়টি প্রকাশ পায় গত সপ্তাহে। ক্ষমা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন একটি শিশুসদনের উপপরিচালক—যিনি শিশুসদনটির পরিচালকের করা যৌন নির্যাতনের অপরাধ ধামাচাপা দিতে সাহায্য করেছিলেন।
রয়টার্সের তথ্য মতে, ২০০৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্কদের যৌন নির্যাতনের দায়ে সেই পরিচালককে আট বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। আর, তিন বছরের কারাদণ্ড পেয়েছিলেন উপপরিচালক।
স্থানীয় এক সংবাদপত্র খবরটি প্রকাশ করলে চারিদিক থেকে সমালোচনার মুখে পড়েন কাতালিন নোভাক। বিরোধী দলগুলো তার পদত্যাগের দাবি জানাতে থাকে। গতকাল শুক্রবার হাজার হাজার বিক্ষোভকারী নোভাকের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী বুদাপেস্টের রাস্তায় নেমে আসে।
বিক্ষোভকারীরা এরপর জড়ো হয় প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সামনে। রয়টার্স বলছে, প্রতিবাদকারীরা যখন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে পৌঁছায় তখন নোভাক সরকারি সফরে দোহায় ছিলেন।
কাতালিন নোভাক হাঙ্গেরির ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। ২০২২ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের আগে পরিবার বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন তিনি। গতকালের ভাষণটিই প্রেসিডেন্ট হিসেবে ছিল তার শেষ ভাষণ। তিনি দুই বছরেরও কম সময় এই দায়িত্বে ছিলেন।
ভুল স্বীকার করে ৪৬ বছর বয়সী নোভাক বলেন, ‘আমি আমার পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। যাদের কষ্ট দিয়েছি এবং যেসব ভুক্তভোগীর মনে হয়েছে যে, আমি তাদের সমর্থন করিনি, আমি তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। শিশুদের ও তাদের পরিবারের সুরক্ষায় আমি ছিলাম, আছি এবং থাকব।’