সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : শ্যামনগরে পানি উন্নয়ন বোর্ডে চলছে বিভিন্ন খাতে হরিলুট ও ঘুষ বাণিজ্য। অফিসের পিয়ন আলম এখন শিল্পপতি। পিয়ন আলম দীর্ঘ ৩০ বছর একই কর্মস্থলে পিয়ন পদে চাকুরী করে আসছে। প্রধান প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী, উপ-প্রকৌশলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে দীর্ঘ দিন এই কর্মসংস্থানে আছে। নজর পড়ে না কোন উর্দ্ধতন কর্তাদের। তার দূর্নীতির ধরণ পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরুরী ভিত্তিতে যে কাজ গুলো হয় সে গুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড কোটেশনে নাম মাত্র টেন্ডার দিয়ে সব কাজ গুলো ঠিকাদার বাদেই পিওন আলমকে দিয়ে করিয়ে থাকেন। সরকারী সিডিউল অনুযায়ী জরুরী কাজে একটি জিও বস্তার মূল্য ৩৭৫ থেকে ৪০০ টাকা বরাদ্ধ হয়ে থাকে কিন্তু সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায় পিয়ন আলম বস্থা ক্রয় থেকে প্লেসিং ও ড্যাম্পিং পর্যন্ত ১৭০/১৮০টাকা খরচ হয় বাঁকি টাকা পিয়ন আলমের পকেটে। সেখান থেকে চলে যান বিভিন্ন স্থরের কর্মকর্তাদের ভাগ বাটোয়ারা। শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন যত ভেড়ী বাঁধ রয়েছে যেখানেই ক্ষতিগ্রস্থ হয় সব খানেই পিয়ন আলম চাকুরী বাদ দিয়ে রাত দিন নিরালস ভাবে ঠিকাদার সেজে কাজ করে পিয়ন থেকে আজ শিল্পপতি হয়েছে। তার নিজ বাড়ি কুষ্টিয়া সদরে তৈরি করেছেন কয়েকটি আলিশান বাড়ি। স্ত্রী,পুত্র, কন্যা ও তার নামে বেনামে ব্যাংকে রয়েছে কয়েক ডজন একাউন্ট। ৩০ বছর আগে শ্যামনগরে চাকুরিতে আসে তার আগে কুষ্টিায় সে শিবিরের একজন নামকরা কর্মী ছিল। শ্যামনগর আসার পর ১৯৯১ নির্বাচনের পরে প্রকাশ্য জামাত বিএনপি হয়ে কাজ করে দলের নেতাদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠে। একই ভাবে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে নিজেকে আওয়ামীলীগের লোক পরিচয় দিয়ে নেতাদের সাথে বিভিন্ন মিছিল মিটিং এ তাকে লক্ষ করা যায়। ২০০১ সালে ৪ দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন পিয়ন আলম সাবেক এমপি গাজী নজরুলের অতিপ্রিয়জন হিসাবে পরিচিত ছিল। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগআবার ক্ষমতায় আসলে পিয়ন আলম নিজেকে আওয়ামীলীগের একজন সক্রিয় কর্মী বলেশ্রেণি ভেদে সব নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিবিশেষ এই প্রতিবেদককে জানান শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পিয়ন আলম এখন অর্ধশত কোটি টাকার মালিক। সব জরুরী কাজের পাসে গেলে ঠিকাদার কে জানতে চাইলে স্থানীয়রা জানান আমরা কোন ঠিকাদার চোখে দেখিনা আমরা জানি পানি উন্নয়ন বোর্ডের পিয়ন আলম নিজেই ঠিকাদার। এভাবে সে ৩০ বছর যাবৎ একই কর্মস্থলে কর্মরত থেকে বহাল তবিয়াতে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা জরুরী কাজ আলম সম্পন্ন করছে। সূধী মহল বলতে চায় পিয়ন আলমের দূর্নীতি আর অনিয়মের কারনে শ্যামনগরের শত কিলোমিটার ঘূকিপূর্ণ বাঁধ দিন দিন আরও ঝুঁকিতে যাচ্ছে। কারণ ১ কোটি টাকা বরাদ্ধ হলে আলম কাজ করেন মাত্র ১০ শতাংশ টাকার। বাঁকি ৯০ শতাংশ নিজের আখের গোচাচ্ছেন এবং উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে চাকুরী করে যাচ্ছেন। সুধী মহল আরও বলেন অবিলম্বে পিয়ন আলমকে চাকুরী থেকে সাময়িক বরখস্ত করে দেশের স্বাধীন দুদকের মাধ্যমে তার সম্পত্তির ও অর্থের তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। এ ব্যাপারে শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পিয়ন আলমের কাছে অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান আমি ৩০ বছর শ্যামনগর আছি এটা সত্য বাঁকি কথা গুলো এক শ্রেণির কুচক্রী মহল আপনাদের কাছে মিথ্যা অভিযোগ করেছে আমি এই সমস্থ অভিযোগের কোনটাতে জড়িত নয়।