বাগেরহাট অফিস
কৌশলে সকল সম্পত্তি লিখে নিয়ে খোঁজ রাখছে না বয়স্ক ও অসুস্থ বাবা-মার। ছেলে ও পুত্রবধূর এমন প্রতারণার কাছে হেরে তারা এখন বাকরুদ্ধ। শেষ বয়সে ঠাঁই হয়েছে রান্না ঘরের পাশে পরিত্যক্ত টিনের ছাপড়ার নীচে। ঘটনাটি ঘটেছে বাগেরহাট জেলা সদরের পূর্ব সায়েড়া গ্রামে। প্রতারণার শিকার ওই গ্রামের মৃত নাজির আলী ফকিরের ছেলে অসুস্থ বৃদ্ধ ফকির মোবারক আলী (৮০) এবং তার স্ত্রী জয়তুন নেছা বেগম (৭০)। প্রতারণা করে সম্পত্তি লিখে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি মানতে নারাজ আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা। বয়স্ক দম্পতির সকল সম্পত্তির দলিল বাতিলের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান তারা।
স্থানীয়রা জানান, মোবারক ও জয়তুননেছা দম্পতির একমাত্র ছেলে জাকির ও পুত্রবধূ শাহীনা বেগম গত ২০১৬ সালের ১ অক্টোবর হেবা দলিলের মাধ্যমে বিলান ও বাস্তভিটাসহ ২ একর ৬০ শতক জমি রেজিস্ট্রি করিয়া নেয়। সেই থেকে আর খোঁজ রাখে না তাদের। ছেলেও পুত্রবধূ তাদের সাথে প্রতারণা করেছে বিষয়টি টের পেয়ে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় ছেলেও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় বৃদ্ধ দম্পতি। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্থানীয় প্রতিনিধিসহ সকলের উপস্থিতিতে মৌখিকভাবে বিষয়টি মিমাংসা করে দেয়। শর্তানুযায়ী দলিলের মাধ্যমে সকল সম্পত্তি পিতা-মাতার নামে ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সালিশের সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে আজ পর্যন্ত সম্পত্তি ফেরত দেয়নি। উল্টো বাবা-মা যাতে জমিতে যেতে না পারে সে লক্ষ্যে আদালতের মাধ্যমে একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সেমি পাকা ঘর থাকতেও তাকে বসবাস করতে হচ্ছে রান্না ঘরের পাশে পরিত্যক্ত একটি টিনের ছাপড়ার নীচে। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটায় তারা। মূলত: জমি রেজিস্ট্রি করে নেওয়ার পর থেকেই দুর্ভোগ নেমে আসে এই বয়স্ক দম্পতির ওপর। তবে বয়স্ক দম্পতীও হেবা দলিলটি বাতিলের জন্য আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে বলে জানান তারা।
ইউপি সদস্য দুলাল মন্ডল বলেন, যে কোনোভাবে জমি জাকিরের নামে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় সালিশ হয়েছিল কিন্তু জাকির সেই সালিশের সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করেছে। আমিও সালিশ করে সিদ্ধান্ত দিয়েছি কিন্তু মানে না। খুবই মানবতের জীবন যাপন করছে ওই বৃদ্ধ দম্পতি। শোনা যাচ্ছে, জাকির ওই সম্পত্তি অন্য কোথাও হ্যান্ডওভার করে দিবে। আসলে এর কোন সমাধান নেই তবে জাকির যদি কিছুটা জমি ওর মায়ের নামেও দিতো। তা দিয়ে হয়তো ওদের চলে যেত। তা না হলে এই দম্পতির ভিক্ষা করে খাওয়া লাগবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি তাদেরকে সাহায্য করেছি। স্থানীয় চেয়ারম্যান সাহেবকেও বলেছি চেয়ারম্যান সাহেব কিছু টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে এবং একটি কার্ডের ব্যবস্থা করে দিবেও বলেছে।
সম্পত্তি লিখে দেওয়ার পর তাদের ঠাঁই হলো পরিত্যক্ত টিনের ছাপড়ার নীচে
Leave a comment