তালা প্রতিনিধি : তালা উপজেলাসহ পাশর্^বর্তী সকল হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের খাদ্য সরবরাহে বৈষম্য দুর করতে ভর্তিকৃত রোগীদের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরী পত্র জারির দাবি জানানো হয়েছে।
তথ্যমতে, সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে। কিন্তু জীবনরক্ষাকারী জনগুরুত্বপূর্ণ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান সরকারি হাসপাতাল। বিত্তশালী ব্যক্তিরা বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানে টাকার বিনিময় সেবা গ্রহণ করেন। কিন্তু হতদরিদ্র দিনমজুর অসহায় মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার উপর নির্ভরশীল। রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী ঔষধগুলো টেন্ডারের মাধ্যমে ক্রয় করা প্রয়োজন। প্রতিদিন রোগীপ্রতি তিন বেলা খাদ্য ও পথ্য সরবরাহের জন্য দৈনিক বরাদ্দ ১৭৫টাকা। উক্ত বরাদ্দকৃত ১৭৫টাকা হতে ভ্যাট ৭.৫০%, আয়কর ৭%, ঠিকাদারের লভ্যাংশ ১০%। সরকারিভাবে ১৭৫টাকা বরাদ্দ থেকে শতকরা কর্তন করা হয় প্রায় ২৭%। তাহলে ১৭৫ টাকায় কর্তন করা হয় ৫৮টাকা। রোগী প্রতি দৈনিক তিন বেলায় খাবার পাচ্ছে ১১৭টাকা। তিনবেলা ১১৭ টাকায় চিকিৎসারত রোগীরা কি খাবার পাবে ? হোটেলে এক বেলা ডাল ভাত ডিম খেলে বিল হয় ১০০টাকা, পোল্ট্রির মাংস খেলে ২০০দুইশত টাকা। কিন্তু এই জনগুরুত্বপূর্ণ জীবনরক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসারত প্রয়োজনীয় ঔষধ ও সকল ভর্তিকৃত রোগীদের খাদ্য ও পথ্য সরবরাহের দিকে কারও সুনজর নেই। এখানেও বৈষম্য সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। অদ্য ১৪ সেপ্টেম্বর তালা হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ছিল ৮৫জন। খাদ্য পেয়েছে ৫০জন। ৩৫জন অসহায় রোগী না খেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তালা হাসপাতালে মহিলা ওয়ার্ডের ৪নং বেডে চিকিৎসারত পরপর ৩বার নির্বাচিত সংরক্ষিত আসনের সদস্য মিসেস সাহিদা বেগম ানান, হাসপাতালে ভর্তিকৃত কোন রোগী খাবার পাচ্ছে আবার কোন রোগী খাবার পাচ্ছেনা। তারা খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। অনেকে খাদ্য না পেয়ে কান্নাকাটি করছে। খুব কষ্টে আছে রোগীরা।
তালা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজীব সরদার জানান, তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তিকৃত রোগীদের দৈনিক ৫০জনের খাদ্য ও পথ্য সরবরাহ করা যাবে। ৫০জনের অধিক রোগীর খাদ্য সরবরাহের টাকা সরকার দেয় না। তালা হাসপাতালের মতো জনগুরত্বপূর্ণ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা সেবার মান সন্তোষজনক থাকায় প্রতিদিন বহিঃবিভাগে শতশত রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করে এবং প্রায় শতাধিক রোগী আন্তঃবিভাগে পুরুষ ও মহিলা ভর্তি থাকে। দুঃখের বিষয় খাদ্য পায় ৫০জন। অসহায় চিকিৎসারত বাকী ৫০জন রোগী খাদ্য পায় না। তাদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে ১০০শয্যা চালু করার অনুমতি চেয়ে কয়েক দফা প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রস্তাবের কোন অনুমোদন মেলেনি। সকল ভর্তিকৃত রোগীদের খাদ্য নিশ্চিতকল্পে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জরুরী ভিত্তিকে পুনরায় প্রস্তাব প্রেরণ করা হবে ।
তালা নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে জনগণের দাবি হলো চিকিৎসা গ্রহণে ভর্তিকৃত রোগীদের খাদ্য পথ্য সরবারহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। নিত্য প্রয়োজনীয় ঔষধ ক্রয়ের দিক বিশেষ বিবেচনা করা এবং তালাসহ সকল উপজেলা হাসপাতালে ১০০শয্যায় উন্নীত করা। জেলা হাসপাতাল ১০০ শয্যা থেকে ২৫০শয্যা চালু করা। রোগী প্রতি দৈনিক সর্বনিম্ন তিনশত টাকা নির্ধারণ করা। মুমূষু রোগীদের স্বার্থ বিবেচনা করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার নজরে আনতে ভর্তিকৃত সকল রোগীদের পথ্যখাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণ। কেউ খাবে কেউ খাবে নাÑএই বৈষম্য দুর করতে ভর্তিকৃত রোগীদের খাদ্য নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পত্র জারির দাবি জানানো হয়।
সরকারি হাসপাতালে রোগীদের খাদ্য সরবরাহের বৈষম্য দুর করার দাবি
Leave a comment