বিশেষ প্রতিবেদক : বঙ্গোপসাগরের সীমানা নিষ্পত্তির পর গভীর সমুদ্রে জ্বালানি অনুসন্ধানে মনোযোগ বাড়িয়েছে প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও মিয়ানমার। উভয় দেশ এ খাতে বিনিয়োগ করেছে বিভিন্ন পর্যায়ে। প্রয়োজন মতো পাচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগও।
অন্যদিকে বাংলাদেশ করছে সময়ক্ষেপণ। গভীর সাগরে নিজেদের জলসীমানায় তেল-গ্যাসের মহাসম্পদ অনুসন্ধানে বিভিন্ন সময়ে বিদেশি বিনিয়োগের মৌখিক প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হলেও এ নিয়ে দেখা যায়নি কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। ফলে দেশের বিশাল সমুদ্র এলাকার জ্বালানি সম্ভার এখনো অনাবিস্কৃতই থেকে গেছে।বঙ্গোপসাগর ঘিরে সুনীল অর্থনীতির নানা সম্ভাবনা নিয়ে তিন পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের তৃতীয় তথা শেষ পর্ব থাকছে আজ।
বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় মোট ২৬টি তেল-গ্যাস ব্লক রয়েছে। তার মধ্যে অগভীর অংশে ১১টি ও গভীর সাগরে ১৫টি। এসব ব্লকের মধ্যে কয়েকটিতে গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এসব কোম্পানি নিজেদের বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে এলেও পরে ব্লক ছেড়ে চলে গেছে। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে দেশে গ্যাসের সংকট বিরাজমান থাকলেও তা মোকাবিলায় আমদানিনির্ভরতাকেই বেছে নিয়েছে জ্বালানি বিভাগ।
সমুদ্রসীমায় মোট ২৬টি তেল-গ্যাস ব্লক রয়েছে। তার মধ্যে অগভীর অংশে ১১টি ও গভীর সাগরে ১৫টি। এসব ব্লকের মধ্যে কয়েকটিতে গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এসব কোম্পানি নিজেদের বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে এলেও পরে ব্লক ছেড়ে চলে গেছে। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে দেশে গ্যাসের সংকট বিরাজমান থাকলেও তা মোকাবিলায় আমদানিনির্ভরতাকেই বেছে নিয়েছে জ্বালানি বিভাগ।
দেশে গভীর ও অগভীর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে ‘বাংলাদেশ অফশোর মডেল প্রডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট’ (পিএসসি) গত বছরের জুলাইয়ে অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। অনুমোদনের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত দরপত্র আহ্বান করা যায়নি।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, আমরা সাগরে খনিজ সম্পদের কোনো জরিপ করতে পারিনি। এ অবস্থায় চুক্তি হলে তা বাংলাদেশ ও বিদেশি কোম্পানি কারও জন্যই সুবিধার হবে না।
বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার বলেন, বঙ্গোপসাগরের ১৩টি স্থানে ভারী খনিজ বালু আছে। এই বালু ইলমেনাইট, গার্নেট, সিলিমানাইট, জিরকন, রুটাইল ও ম্যাগনেটাইটসমৃদ্ধ। বাংলাদেশ ও জার্মানির যৌথ জরিপে সাগরের ৮০ থেকে ১১০ মিটার গভীরতায় এই মূল্যবান সম্পদের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
এছাড়া অগভীর সমুদ্রের তলদেশে কোবাল্ট, ভানাডিয়াম, মলিবডেনাম ও প্লাটিনামে গঠিত ম্যাঙ্গানিজ ক্রাস্ট এবং তামা, সিসা, জিংক, কিছু পরিমাণ সোনা ও রুপা দিয়ে গঠিত সালফাইডের অস্তিত্ব আছে। এসব অতি মূল্যবান সম্পদ সমুদ্রের ১৪০০ থেকে ৩৭০০ মিটার গভীরে রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গোপসাগরে শুধু খনিজ সম্পদই নয়, ৩০ থেকে ৮০ মিটার গভীরতায় এক ধরনের ক্লে’র সন্ধান পাওয়া গেছে। অগভীর সমুদ্রের এই ক্লে উত্তোলন করা গেলে বাংলাদেশের সিমেন্ট শিল্পে বিপ্লব ঘটবে।