সুন্দরবনে মৎস্য আহরণে বনবিভাগের দু’মাসের নিষেধাজ্ঞা সোমবার মধ্যরাতে প্রত্যাহার হয়েছে। তাই দীর্ঘদিন পর উপক‚লের জেলে পরিবারে মাছ আহরণ ও বেচাকেনার নানা প্রস্তুতি চলছে। প্রজনন মৌসুমকে ঘিরে গত পহেলা জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট মাস পর্যন্ত বনের অভ্যন্তরের নদী-খাল ও জলভ‚মিতে প্রবেশ ও সকল প্রকার মৎস্য আহরণ বন্ধ রাখা হয়েছিল। আর এতে চরম হতাশা আর দূরাবস্থার মধ্যে পড়েছিল সুন্দরবন উপক‚লের প্রায় ৩০ হাজার জেলে পরিবার। বন বিভাগ ও জেলেদের সুত্রে জানা গেছে, প্রায় ৬ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনে ছোট বড় মিলিয়ে ৪৫০টি নদী-খাল রয়েছে। বনাঞ্চলের এ জলাভ‚মির মধ্যে অভয়ারণ্য ঘোষিত ৩০টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রসস্ত খালে সারা বছর মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। আর বাকী অংশের নদী-খাল ও জলাভ‚মিতে পারমিটধারী জেলেরা মৎস্য আহরণ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। বনাঞ্চালে মৎস্য আহরনের উপর সুন্দরবন উপক‚লের প্রায় ৩০ হাজার জেলে পরিবারের জীবন জীবিকা নির্ভর। এদের বেশির ভাগই জেলেই বংশ পরম্পরায় সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। মোংলা ও আশপাশের এলাকাসহ সুন্দরবন লাগোয়া এলাকার বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীও বনের মৎস্য সম্পদ আহরণ ও বিকিকিনির সঙ্গে জড়িত। সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানস এর (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সালে সুন্দরবন বন বিভাগ একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। যার অংশ হিসেবে প্রতিবছর ১ জুলাই ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের সকল নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। মৎস্য আহরনের এ নিষেধাজ্ঞা সোমবার মধ্যরাতে শেষ হয়। তাই বন বিভাগের অনুমতি ও পাসপারমিট সংগ্রহ করতে সুন্দরবনের বিভিন্ন স্টেশন সমূহে এখন জেলেদের ভিড় বাড়ছে। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: বেলায়েত হোসেন জানান, বৈধ পাস পারমিটের আডালে যাতে বণ্যপ্রানী শিকারী চক্র, বিষ প্রয়োগে মাছ শিকারে কেউ যাতে বনে প্রবেশ না করতে পারে সেই বিষয় নজরদারী করবে বনবিভাগ। আর এ জন্য বনবিভাগের সকল স্টেশন ও টহল ফাঁড়িকে নির্দেশনাসহ সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।