জন্মভূমি রিপোর্ট
আসন্ন পবিত্র মাহে রমজান ও ঈদ-উল-ফিতরকে টার্গেট করে সড়কপথ ছেড়ে এখন সুন্দরবনের রুট নিরাপদ হিসেবে ব্যবহার করছে চোরাকারবারীরা। অবৈধ পথে আসা ভারতীয় পোশাকে ছেয়ে যাচ্ছে দক্ষিনাঞ্চলের বাজারগুলো। যার ফলে দেশীয় ব্যবসায়ীরা হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে, চাহিদা কমছে দেশীয় কাপড়ের বাজারে। প্রশাসনের তৎপরতায়ও থামছে না চোরাকারবারীদের দৌরাতœ। ইতিমধ্যে সুন্দরবনের খাল থেকে ট্রলারসহ ১৮ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা মূল্যের অবৈধ বিদেশী কাপড় ও জুতা জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন মোংলা। অবৈধ কাপড়গুলো শুল্ক ফাঁকি দিয়ে নদীপথে বাংলাদেশে আনা হচ্ছিল। তবে এসময় কাউকে আটক করতে পারেনি কোস্টগার্ড সদস্যরা। কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের পূর্বক পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য জব্দকৃত কাপড় মোংলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেঃ কমান্ডার আমিরুল হক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার (১২মার্চ) বিকেল থেকে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের হারবাড়িয়ার চরাপুটিয়া খাল সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সন্দেহভাজন ট্রলারটিকে থামানোর জন্য সংকেত দেয় কোস্টগার্ড সদস্যরা। এ সময় ট্রলারটি চরপুটিয়া খাল পাড়ে থামিয়ে ট্রলারে থাকা চোরাকারবারীরা সুন্দরবনে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ট্রলারটি তল্লাশী করে ১৪ হাজার ৩৭৭ পিস বিদেশী শাড়ী, ১ হাজার ৩০৩ পিস লেহেঙ্গা, ৩৯৬ পিস থ্রি-পিচ এবং ৪৭৫ জোড়া জুতা জব্দ করা হয়। জব্দকৃত বিদেশী কাপড় ও জুতার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৮ কোটি ৬০ লক্ষ ৮৪ হাজার ২২০ টাকা। প্রতি বছর ঈদ, পূজা আর নানা উৎসব আয়োজনে নতুন কাপড়ের চাহিদা বেড়ে যায় দোকানগুলোতে। আর লোকজনের এমন চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চোরাই পথে বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কাপড়ের বড় বড় চালান। বেশ কয়েক বছর ধরে অহরহ ঘটছে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চোরাইপথে কাপড়ের চালান আনার ঘটনা। এ কারনে যারা ভারতীয় শাড়ী কাপড় বিক্রি করছেন তারাই কেবল ব্যবসা করছেন। কারন শুল্ক ফাঁকি দেয়ার কারনে কম মূল্যে ভারতীয় চাকচিকে শাড়ি ও থ্রি পিচ বিক্রি বেশি হচ্ছে। আর দেশীয় কাপড়ের পণ্য বিক্রি করতে না পারায় বাকী ব্যবসায়ীরা পড়ছেন লোকসানে। সেই সঙ্গে কমছে দেশীয় কাপড়ের চাহিদা। মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন এম হাবিবুল আলম বলেন, সুন্দরবন ও খুলনাসহ তৎসংলগ্ন এলাকায় সরকারের শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে বিদেশী কাপড়ের চোরাচালন আটকের ফলে খুলনা, বাগেরহাট মোংলা, যশোর ও সাতক্ষীরা এলাকায় কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে। যার কারনে ১২ মার্চ কোটি টাকার চালান আটকের সাফল্য টহলেরই অংশ। পাচারকারীরা নিজ স্বার্থ ও বেশি মুনাফা লাভের আশায় সরকারি কর ফাঁকি দিয়ে গোপন পথে বিদেশী শাড়ি কাপড় চোরাচালনী বা আমদানি করছে। যা একেবারেই কাম্য নয়। অবৈধভাবে ভারতীয় মালামাল প্রবেশ ক‚ণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হবে।