হারুন-অর-রশীদ : রেল লাইনের দুই পাশে সারি সারি ঝুপড়ি ঘর। চায়ের দোকানে বিভিন্ন বয়সি মানুষের জমজমাট আড্ডা। সব কিছু ছাপিয়ে সকলের নজর একদল শিশুর দিকে। তারা গোল হয়ে বসে মেতে উঠেছে শিক্ষা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চায়। এমন সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন স্বপ্নপূরী নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
সেখানে নেই কোনো বাদ্য, নেই কোনো আড়ম্বর। তারপরও মনোযোগে নেই এতটুকু ঘাটতি। তাদের মধ্যমণি হয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এম সাইফুল ইসলাম নামে এক তরুণ। তাকে সহযোগিতা করছেন মোঃ মিরাজ, প্রিয়া রহমানসহ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী। পড়ন্ত বিকেলে এমন দৃশ্য দেখা যায় খুলনা রেলওয়ে এলাকায়। একটি শিশু নিবাস করার পরি কল্পনা রয়েছে। খোলা আকাশের নিচে শিশুদের পাঠ দান করান হয়।
সংগঠনের সভাপতি এম সাইফুল ইসলাম জানান, খুলনা রেল লাইন এলাকায় সাধারণত ছিন্নমূল মানুষ ও পথশিশুদের বাস। তাদের খাদ্য, অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান বা পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। অথচ রয়েছে অফুরন্ত প্রতিভা। পরিবেশের কারণে অনেক সময় প্রতিভার বিকাশ ঘটে না। তারা ঝরে পরে অযত্ন, অবহেলায়। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের শিশুদের একটু ভিন্ন পরিবেশ দিতে পারলে তারা ভালো করবেই।
শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে সবাই মিলে ‘স্বপ্নপূরী’ নামে একটি সংগঠন পরিচালনা করছেন। এর আওতায় প্রথমত শিশুদের গান, আবৃত্তি ও নাটকের মাধ্যমে তাদের আকৃষ্ট করা হয়। নাম দেওয়া হয় স্বপ্নপূরী স্কুল। পর্যায়ক্রমে তাদের পাঠ্যবইয়ের জ্ঞান দান করা হবে বলে জানান তিনি।
‘স্বপ্নপূরী’ আওতায় ১০০ জন শিশুকে কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন শিশু। তাদের দেশিয় সংস্কৃতি চর্চায় উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এখান থেকে শিখে অনেক শিশু বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বেশ ভালো করেছেন।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্নপূরী’র সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ২০১৯ সালের পহেলা নভেম্বর আমরা মাত্র চার-পাঁচজন মিলে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজটি শুরু করেছি। আপাতত শিশুদের উন্মুক্ত আকাশের নিচে পাঠদান করা হচ্ছে। সমাজের বিত্তবানদের কাছে আবেদন একটি ঘর পেলে শিশুদের সুন্দর পরিবেশে লোখাপড়া কলে সমাজ আলোকিত করতে পারে।