জন্মভূমি ডেস্ক
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামির (হুজি) প্রধান অপারেশন সমন্বয়কসহ তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।
শুক্রবার সিটিটিসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই তিন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- মো. মাইনুল ইসলাম (৪২), শেখ সোহান স্বাদ (২৫) ও মুরাদ হোসেন কবির (৪৩)।
তাদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত ১টি গাড়ি, ৫টি মোবাইল, ১টি মাইক্রোফোন, ১টি চাপাতি, ২টি ছোরা, ১০টি ডেটোনেটর, ১৭০টি বিয়ারিং লোহার বল, ১টি স্কচটেপ, ৫ লিটার অ্যাসিড, ৩টি আইডি কার্ড ও উগ্রবাদী বার্তার বই উদ্ধার করা হয়েছে।
সিটিটিসি বলছে, মাইনুল হুজির প্রধান অপারেশন সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করতেন। তার বাড়ি ঝালকাঠি। তিনি ২০১৫ সালে হুজির শীর্ষ নেতা কারাবন্দী মুফতি মঈনউদ্দিনকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
গ্রেপ্তার সোহানের বাড়ি হবিগঞ্জে। তিনি এইচএসসি পাস করে ঢাকার মিরপুর বাঙলা কলেজে পড়ালেখার পাশাপাশি একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। ২০১৬ সালে ঢাকায় একুশে বইমেলায় নাশকতার ঘটনায় তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনের দুটি মামলায়ও তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। জামিনে বের হয়ে তিনি মাইনুলের নেতৃত্বে হুজির হয়ে কাজ করছিলেন।
গ্রেপ্তার মুরাদ হুজির একজন সক্রিয় সদস্য। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ। তিনি ব্যবসার আড়ালে হুজির হয়ে কাজ করতেন।
গ্রেপ্তার তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিটিটিসি।
॥ দুর্গম এলাকায় হুজি’র ট্রেনিং করাতো তারা ॥
সিটিটিসির সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী এর সক্রিয় সদস্য। তারা মাইনুল ইসলামের নেতৃত্বে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী পুনর্গঠন, পূর্ণাঙ্গ শুরা কমিটি প্রস্তুতকরণ, সংগঠনের অর্থ দাতা এবং সদস্যদের কাছ থেকে অর্থের যোগান নিশ্চিতকরণ, ব্যাপকহারে সংগঠনের রিক্রুটমেন্টকরণ, অস্ত্র সংগ্রহ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ, কারাগারে আটক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের জামিনের ব্যবস্থাকরণ, বান্দরবান-নাইক্ষ্যংছড়ি পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় জমি লিজ নিয়ে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করার কাজে নিয়োজিত ছিলো।
সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, তারা বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় তাদের সংগঠনের বিস্তার ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষে সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন পরিচয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলো। তারা কারাগারে আটক ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডাক্তার জাফর ও ২০০০ সালের কোটালিপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুল ওয়াদুদ ওরফে গাজী খানের নির্দেশে সাংগঠনিক কাজ চালাচ্ছিলো।
গ্রেপ্তারকৃত মাইনুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবত নিষিদ্ধ সংগঠন হুজি’র প্রধান অপারেশন সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছিলো। সে সাংবাদিকতার বেশ ধারণ করে সংগঠনের দাওয়াতি কাজ, অর্থ সংগ্রহ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করতো। তার পরিকল্পনা ছিলো ঢাকা শহরে বড় ধরনের নাশকতা করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা। সে ২০১৫ সালে হুজি’র শীর্ষ নেতা কারাবন্দি মুফতি মঈনউদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলো।