ডেস্ক নিউজ : ভিসার আবেদন করা ২০ হাজার বাংলাদেশির পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছে ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস। হুমকিসহ তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়ে পাঠানো ই-মেইলের কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় দূতাবাস। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ভারত সরকারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য প্রিন্ট জানিয়েছে, বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত থাকায়, পাসপোর্টগুলো এত দিন ভারতীয় হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে ছিল। সূত্র নিশ্চিত করেছে, জরুরি ভিসার জন্য মাত্র কয়েক শ অনুরোধ বিবেচনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে মেডিকেল, স্টুডেন্ট এবং ডাবল এন্ট্রি ভিসা অন্তর্ভুক্ত।
গত মাসে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের কারণে বিক্ষোভের পর থেকে বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলো অনেকাংশে বন্ধ থাকায় অনেক আবেদনকারীর পাসপোর্ট ঢাকায় হাইকমিশনে যায়। কিন্তু সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় উত্তেজিত আবেদনকারীরা হাইকমিশনে শক্ত ভাষায় বেশ কয়েকটি ই-মেইল পাঠায়। এমনকি একটি ই-মেইলে ভাঙচুরের হুমকিও দেওয়া হয়। একই সময়ে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলোতে কর্মীদের হেনস্তাও করা হয়েছিল। অনেকে হাইকমিশনকে ট্যাগ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকিও দিয়েছেন।
বাংলাদেশে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন ছাড়াও আরও চারটি কনস্যুলেট আছে। যেখান থেকে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক ভিসা অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে ভারত ১৬ লাখ বাংলাদেশিকে ভিসা দিয়েছিল। এর মধ্যে সাড়ে ৪ লাখই ছিল চিকিৎসা ভিসা। একই ভাবে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ৮ লাখ ভিসা দিয়েছে ভারত। যার মধ্যে ২ লাখই চিকিৎসা ভিসা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, ৫ আগস্ট থেকে ভিসা ইস্যু করা বন্ধ আছে। কর্মী স্বল্পতার পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভিসা না দেওয়ার সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু কিছু জরুরি ক্ষেত্রে—যেমন চিকিৎসা ক্ষেত্রে জরুরি মনোযোগ প্রয়োজন, ভারতে বিভিন্ন কোর্সে যোগদানকারীদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা এবং কিছু ক্ষেত্রে তৃতীয় দেশের ভিসার জন্য আবেদন করতে ভারতে আসতে হয় এমন লোকদের জন্য ডবল এন্ট্রি ভিসার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, বাকি পাসপোর্টগুলো ফেরত দেওয়া হয়েছে।
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, জানা গেছে যে দুর্গা পূজার উৎসবকে কেন্দ্র করে ভিসার জন্য বাড়তি কিছু অনুরোধে এসেছে। তিনি বলেন, ‘দুর্গা পূজা ঘনিয়ে আসছে। অনেক বাংলাদেশি নাগরিক এ সময় জন্য পশ্চিমবঙ্গ ভ্রমণ করেন। তাই, অনেক অনুরোধ আসছে। এমন আলাপও চলছে যে, বাংলাদেশিদের পশ্চিমবঙ্গ ভ্রমণ আটকানো হলে কলকাতার বাজারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’