জন্মভূমি ডেস্ক : পবিত্র ঈদুল আজহায় নৌপথ ব্যবহারকারী ঘরমুখো মানুষের যাত্রা সহজ ও নিরাপদ করতে ১৩ জুন থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ করেছে নৌপুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার (০৬ জুন) বেলা ১১টায় পুলিশ প্লাজায় ঈদুল আজহা উপলক্ষে নৌপথের আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন নৌপুলিশ প্রধান মোহা. আবদুল আলীম মাহমুদ।
সভায় নৌপুলিশ প্রধান বলেন, “আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের নৌপথে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে এবং পশু ও পণ্য পরিবহন নিরাপদ ও নির্ঝঞ্ঝাট করতে নৌপুলিশ বদ্ধপরিকর। পবিত্র ঈদে নৌপুলিশ সব নৌঘাট, নৌটার্মিনালে দায়িত্ব পালন করবে।”
তিনি বলেন, “পন্টুনে হকার প্রবেশ নিষিদ্ধ করা, লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা থেকে বিরত থাকা, ছোট ও ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চে যাত্রী পরিবহনে বিরত থাকা, লঞ্চে যাত্রী সংখ্যার আনুপাতিক হারে লাইফ জ্যাকেট, বয়া প্রভৃতির ব্যবস্থা রাখা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নৌযান চালানো, সূর্যাস্তের পর বালুবাহী বাল্কহেড ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখাসহ সরকার নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ ১৩ জুন থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত সময়ে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হবে।”
আবদুল আলীম মাহমুদ বলেন, “কোরবানির পশু পরিবহনে যাতে কোনো প্রকার বিঘ্ন না হয় সেজন্য কোরবানির পশু বহনকারী নৌযান কোন হাটে ভিড়বে তা উল্লেখ করে ব্যানার লাগাতে হবে এবং কোরবানির পশুসহ অন্যান্য পণ্যবাহী নৌযান নৌপথে যাতে কোনো হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে নৌপুলিশের বিশেষ নজরদারি থাকবে।”
আবদুল আলীম মাহমুদ বলেন, “ঈদে নৌপথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নদীর পাড়ে ১০৮টি পশুর হাট বসছে। সেগুলোরও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই হাটগুলো নিরাপত্তায় সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এছাড়া জালনোট বাজারে ছড়িয়ে পড়া রোধে নদীর পাড়ের ১০৮টি হাটে জাল নোট শনাক্তের মেশিন রাখা হবে।”
তিনি বলেন, “নৌপথে যেকোনো সমস্যায় নৌপুলিশের কন্ট্রোল রুমের নম্বর-০১৩২০১৬৯৫৯৮ অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে নৌপুলিশকে অবগত করলে নৌপুলিশ সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
নৌপুলিশ প্রধান বলেন, “পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনে নৌপথ ব্যবহারকারী প্রত্যকেই যেন নিরাপদে তাদের পরিবার পরিজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন এবং ব্যবসায়ীরা যাতে নির্বিঘ্নে পণ্য ও কোরবানির পশু নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যেতে পারেন সেটা নিশ্চিত করতে নৌপুলিশ দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাটে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করবে।”
তিনি নৌপথ ও নৌযান সংক্রান্ত সব সরকারি- বেসরকারি সংস্থা, সেবা প্রত্যাশী জনগণ এবং নৌপুলিশসহ সবার আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা দুর্ঘটনামুক্ত ও নিরাপদ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এছাড়া লঞ্চে চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাই, পকেটমারসহ যেকোনো হয়রানি বন্ধে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো, নৌযান চলাচলের পথে মাছ শিকারের জন্য জাল বিছানো প্রতিরোধ করা, বৈধ কাগজপত্রবিহীন কোনো নৌযান না চালানো, ন্যায্যমূল্যে ভাড়া আদায়ে তদারকি, টার্মিনাল ব্যতীত নদীর যেকোনো জায়গায় অন্য কোনো ছোট নৌযান থেকে যাত্রী উঠানো বা নামানো বন্ধ নিশ্চিতকরণ, বিভিন্ন নদীকেন্দ্রিক হাটে জোরপূর্বক পশু নামালে বা চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, পশুবাহী নৌযান কোন হাটে ভিড়বে তা ব্যানারে লিখে টানানো, প্রত্যেক লঞ্চে প্রশস্ত সিঁড়ি এবং সিড়ির দুই পাশে রেলিং এর ব্যবস্থা, লঞ্চের পুরাতন/জরাজীর্ণ মুরিং পরিবর্তন করে নতুন/আলাদা সংযোজন, সব নৌযানে পর্যাপ্ত ফায়ার ফাইটিংয়ের ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সভায় আলোচনা করা হয়।