জন্মভূমি ডেস্ক : নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টকে ৫০ কোটি টাকা জমা দিয়েই আপিল করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর স্বাক্ষরিত ২৪ পাতার হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
এ বিষয়ে ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল বিভাগে যাচ্ছেন।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টকে ৫০ কোটি টাকা জমা দিয়ে ২০১১ থেকে ২০১৩ করবর্ষের আয়কর আপিল দায়ের করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি আদালতে উপস্থিত হয়ে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় শ্রম আপিল আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেন ড. ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের অপর তিন কর্মকর্তা। সেই আবেদন খারিজ করে এ রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে আদালত বলেন, আইন অনুযায়ী যেটা দেওয়ার সেটাই ড. ইউনূসকে দিতে হবে। এখানে অনুকম্পা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই।
মামলার এজাহারে জানা যায়, ২০২০ সালে নভেম্বরে ২০১১ থেকে ২০১৩ দুই বছরের প্রায় ২৫০ কোটি টাকা আয়কর দাবি করে গ্রামীণ কল্যাণ ট্রাস্টকে নোটিশ পাঠায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এরপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে গ্রামীণ কল্যাণ ট্রাস্ট অর্থ নেই বলে মওকুফ চান। কিন্তু তখন তাদের একটি অ্যাকাউন্টেই প্রায় সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার মতো ছিল। পরে অ্যাকাউন্টে অর্থ রয়েছে জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অর্থ চেয়ে নোটিশ করে। এরপর গ্রামীণ টেলিকম নোটিশের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন।
রিটের শুনানি নিয়ে নোটিশ কেন বেআইনি বলা হবে না, এ নিয়ে রুলও জারি করেন আদালত। এরপর গত তিন বছরে বিভিন্ন আদালত ঘুরে মামলাটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে আসে। সেটি শুনানি শেষে গ্রামীণ টেলিকমের রিট আবেদন খারিজ করে দেন আদালত। সেই সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমকে আদেশ দেন নিয়ম অনুযায়ী দাবি করা আয়করের ২৫ শতাংশ টাকা আগে জমা দিয়ে এরপর এনবিআরের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করতে।
এর আগে গত ১ জানুয়ারি ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান শেখ মেরিনা সুলতানা এক মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূস ও পরিচালক আশরাফুল হাসান, নুরজাহান বেগম ও এম শাহজাহানকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে তাদের চারজনকেই ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ২৫ দিন করে কারাদণ্ড দেন আদালত। আর রায়ের পরই পৃথক জামিন আবেদন করলে চারজনকেই আপিলের শর্তে জামিন দেন আদালত।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলাটি করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) এস এম আরিফুজ্জামান।