শেখ আব্দুল হামিদ : আর মাত্র ১১ দিন পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কাঙ্খিত খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিমুহুর্তে প্রচার-প্রচারণা তুঙ্গে উঠছে। নগরীর ওলি-গলিতে এখন উৎসবমূখর পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রার্থী এবং প্রার্থীর সমর্থকদের প্রতিশ্রুতির শেষ নেই। সঙ্গে সঙ্গে এক প্রর্থী তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে ভুল করছেন না। তবে প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে নারীদের সরব ভূমিকা সকলের দৃষ্টিতে পড়ছে।
খুলনায় এখন ৩১টি ওয়ার্ডেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পদচারনায় মুখরিত বিভিন্ন ওলিগলি। মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে তালুকদার আব্দুল খালেকের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন বিভিন্ন ওয়ার্ডবাসী। তারা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং অসমাপ্ত কাজের ইতি টানতে আবারও মেয়র হিসেবে তাকেই দেখতে চায়। তবে নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, তালুকদার আব্দুল খালেক মেয়র নির্বাচিত হলেও ভোটের মাঠে ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকলে সে ক্ষেত্রে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। তারা এ কথাও বলছেন, কাউন্সিলরদের ক্ষেত্রে প্রার্থীতা উন্মুক্ত থাকায় তারা ঠিকই ভোটারদের উপস্থিত করতে মরিয়া হয়ে কাজ করবেন। আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিত হবে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন।
খুলনা নগরবাসীর অভিভাবক হিসেবে তালুকদার আব্দুল খালেক গত ২০০৮ সালে প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। সে সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনার উন্নয়নে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অর্থ বরাদ্দ দেন। উন্নয়নের কাজ চলমান থাকতেই ২০১৩ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হওয়ায় সে উন্নয়ন থমকে যায়। নগরবাসী সর্বোচ্চ এ বরাদ্দের সুফল থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েন। এবারও চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রধানমন্ত্রী পুণরায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তালুকদার আব্দুল খালেককে মনোনয়ন প্রদান করেছেন। মেয়র বিদ্যমান প্রকল্পের পাশাপাশি এবার তিনি আরও ১৫শ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছেন। তিনি খুলনাকে ‘হেলদি সিটি’ প্রকল্পের মাধ্যমে একটি আধুনিক, স্মার্ট, সবুজ, স্বাস্থ্যকর শহরে পরিণত করতে চান। জাতীয় পার্টি (জাপার) মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু গণসংযোগকালে বন্ধ মিল কলকারখানা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল মেয়র নির্বাচিত হলে নগরবাসীর পৌরকর ৩০ শতাংশ মওকুফ এবং ট্রেড লাইসেন্স ফি অর্ধেক করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। তিনি এবং তার সমর্থকরা মনে করেন, হাতপাখা প্রতিকে ভোট দেয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট ভোটের ঘাটি তাদের রয়েছে। এরপর নির্বাচন থেকে দুরে থাকা দলের একটা সমর্থন তারা আশা করছেন।
জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী এসএম সাব্বির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি ও তার সমর্থকরা প্রতিদিনই নগর জুড়ে ঘুরছেন। অন্যদিকে উচ্চ আদালতের রায়ে প্রার্থীতা ফিরে পেয়ে নতুন করে প্রচারণায় যুক্ত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান মুশফিক। তিনি এবং তার সমর্থকরা মনে করেন নির্বাচনমূখি না হয়েও একটি নিরব ভোটার গ্রুপ তাকেই বেছে নিবেন।
সব মিলিয়ে নির্বাচনের দিনক্ষণ এগিয়ে আসার সাথে সাথে বাড়ছে উৎসাহ উদ্দিপনা। এবারের নির্বাচনে মোট ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ভোটারদের মধ্যে রয়েছেন ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন পূরুষ ও ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন মহিলা। গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে মোট বোটার বেড়েছে ৪২ হাজার ৪২৯ জন।
কেসিসি নির্বাচন : প্রচার-প্রচারণায় সরব নারী সমর্থকরা
Leave a comment