নড়াইল প্রতিনিধি : স্থানীয় আধিপত্যকে কেন্দ্র করে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাচুড়ি ও ফুলদাহ গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে কম পক্ষে ১৩জন আহত হয়েছে। এলাকায় থমথমে ভাব বিরাজ করছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে চাচুড়ি ইউনিয়নের চাচুড়ি গ্রামের আনসার শেখের বাড়ির সামনে খাল পাড়ে ওই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে দুই পক্ষের ইটের আঘাতে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলমসহ আরো দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। অন্য আহত পুলিশ সদস্য হলেন জেলা ডিবির এসআই সাইফুল ইসলাম ও কালিয়া থানায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল রিয়াজ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর চাচুড়ি বাজারে ফুলদাহ গ্রামের ফসিয়ার মোল্যার পক্ষের লোকজন চাচুড়ি গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে মুকুল মোল্যা (৪৫), মৃত হাশেম মোল্যার ছেলে মাওলানা গোলজার মোল্যা (৫০), আকছেদ মোল্যার ছেলে তোফায়েল শেখ (২৫) ও রিজু শেখের ছেলে আব্দুল্লাহ (২৫) কে কুপিয়ে আহত করে।
এঘটনার জের ধরে আজ সকালে ৭টার দিকে চাচুড়ি বাজার সংলগ্ন কালিয়া-নড়াইল সড়কে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ সময় গোলাম মোস্তফার পক্ষে পুরুলিয়া ইউনিয়নের ফুলদাহ গ্রামের একাংশ ও চন্দ্রপুর গ্রামের একাংশ চাচুড়ি গ্রামের সাথে যোগ দেয়। অপরদিকে ফুলদাহ গ্রামের ফসিয়ার মোল্যার পক্ষে চন্দ্রপুর গ্রামের একাংশ যোগ দেয়। এর পরই সাড়ে ৮টার দিকে গ্রামবাসী চাচুড়ি গ্রামের আনসার শেখের বাড়ির সামনে খাল পাড়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘের্ষ জড়িয়ে পড়ে।
এতে উভয় পক্ষের বিপ্লব ফকির (৪০), রমজান বেগ (৪০), শুকুর মোল্যা (৪৫), হাবিব মোল্যা (২০) সাহাবুউদ্দিন (৪০), আব্দুল্লাহ (৩৫), মিল্টন মোল্যা (৩৮), মুহিদ মোল্যা (৫০), খাইরুল মোল্যা (৩৫) সহ কমপেক্ষে ১০ জন আহত হয়। আহতরা নড়াইল সদর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গোলাম মোস্তফা পক্ষের ইমরুল হোসেন জানান, গতকাল সন্ধ্যায় বিনা উশকানিতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব খাঁজা মিয়া মোল্লার নির্দেশে ফসিয়ার মোল্যার লোকজন আমাদের লোকজনের উপর হামলা চালিয়ে মসজিদের ইমামসহ ৪জনকে কুপিয়ে আহত করে। আজ সকালেও তারা আমাদের উপর হামলা করেছে। এ ঘটনায় আমাদের ৪/৫ জন আহত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব খাঁজা মিয়া সরকারি চাকরিতে থাকাকালীন সময়েই এলাকায় অপরাজনীতি শুরু করেছেন। তার (সচিব) সকল লোকজন বিএনপি পন্থী।
আসন্ন নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে তারা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়।
ফসিয়ার মোল্যা পক্ষের বাদল মোল্যা জানান, সকালে আমাদের লোকজন ঘুমিয়ে ছিলে। হঠাৎ করে চাচুড়ি গ্রামের লোকেরা এসে আমাদের উপর হামলা করেছে। কয়েকটি বাড়িঘর কুপিয়েছে। এসময় আমাদের পাঁচ-ছয়জন আহত হয়েছে।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। কোন পক্ষই এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নড়াইলে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দু-পক্ষের সংঘর্ষ! কালিয়া থানার ওসিসহ আহত ১৩
Leave a comment