অনেকদিন ধরে বন্ধ রয়েছে শিশুদের শিক্ষালয়গুলো, কলেজগুলো। যখন খুলবে তখন আবার ভরে উঠবে এই কলকাকলিময় স্কুল মাঠ, ক্লাস রুম, বৃক্ষ শোভিত প্রাঙ্গণ। অনেক বিদ্যালয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু অনেকদিন স্থাপনা পরিত্যক্ত থাকার পর সেখানে কী ধরনের ময়লা হতে পারে বা কী ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি, নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকতে পারে তার একটি জানা ফরম্যাট হাতে থাকা প্রয়োজন।
প্রতিটি বিদ্যালয়েই বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা থাকে। অনেক বিদ্যালয়ে এই খাবার পানির জন্য পানির ট্যাঙ্ক থাকে। অনেকদিন অব্যবহৃত থাকার ফলে এই ট্যাঙ্কগুলোতে জন্ম নিয়েছে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ফাঙাস ও অন্যান্য ক্ষতিকর রোগ-জীবাণু। সঠিকভাবে পরিষ্কার না করে এই পানি পান করলে শিশুরা পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হবে। সুতরাং পানির ট্যাঙ্কতো পরিষ্কার করতে হবেই তার সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে পাইপের ভেতরে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কারও। ট্যাঙ্কগুলো ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করে বিশুদ্ধ করা যেতে পারে। পরিষ্কারের পর অনেকবার পানি পূর্ণ করে তা ফেলে দিলে পাইপও পরিষ্কার হয়ে যাবে।
প্রতিটি রুমে যে ধরনের ধুলা জমে থাকে সে ধুলাগুলো অত্যন্ত সূক্ষ্ম পার্টিকেল বহন করে বলে তা থেকে সর্দি বা অ্যালার্জি জাতীয় সমস্যা দেখা দিতে পারে শিশুদের। তাই পুরো রুম ধুলামুক্ত করবার জন্য শুধু শুকনোভাবে মোছা নয় পানি দিয়ে বা জীবাণুনাশক ছিটিয়েও মোছার প্রয়োজন হবে। এতে করে যেমন রুম জীবাণুমুক্ত হবে তেমনি পুরনো গন্ধ লেগে থাকার ভাবটাও কেটে যাবে এবং বাতাসে পার্টিকেল ওড়াও কমবে।
সবচেয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে ইলেকট্রিক পয়েন্ট, সুইচ ও তারগুলো। প্রতিটি আলাদা আলাদাভাবে চেক করে নেওয়া প্রয়োজন। সুইচের স্ক্রু অনেক সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে থাকে। ফলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বিপদ। ফ্যান যেখানে ঝুলানো আছে সেগুলো মরিচা পড়ে নষ্ট হতে পারে যার কারণে ফ্যান চালানোর সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো খুলে পড়ে বিপদ ঘটতে পারে। পরীক্ষা করে নিতে হবে অগ্নি নির্বাপণ সিলিন্ডারগুলো ঠিক আছে কি না। ওয়াকওয়ে বা হাঁটার জায়গাগুলোতে ধারালো, পেড়েক বা টিনের অংশ পড়ে আছে কি না।
প্রতিটি টয়লেট আলাদা আলাদাভাবে জীবাণুমুক্ত করাও গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের শিশুরা যেখানে থাকবে তার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আমার লেখাটি সবার কাছে নাও পৌঁছতে পারে। এ কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতর এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন দিয়ে বা চিঠি দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করবে এটাই প্রত্যাশা।