জন্মভূমি রিপোর্ট
জাতীয় পার্টির মহানগর কমিটি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি শেখ আবুল কাশেম এবং তার গাড়ীর ড্রাইভার মিকাইল হত্যা মামলার আসামি পরীক্ষার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল, খুলনার বিচারক মো: সাইফুজ্জামান হিরো আগামী ২৩ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
সোমবার ফৌজাদারী কার্যবিধির ৩৪২ ধারা মোতাবেক আসামিদের পরীক্ষা করার জন্য নির্ধারিত দিনে অভিযুক্ত সাবেক এমপি আব্দুল গফফার বিশ্বাস কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। অন্য ছয় আসামি জাপা মনোনিত মেয়র প্রার্থী মুশফিকুর রহমান মুশফিক, তরিকুল হুদা টপি, মিল্টন ওরফে আনিছুর রহমান, মফিজুর রহমান মফিজ, ওয়াছিকুর রহমান ওয়াছিক এবং মো: তারেক পলাতক রয়েছে। দু’ আসামি সৈয়দ মনিরুল ইসলাম মনি এবং ইখতিয়ার উদ্দীন বাবলু মৃত্যুবরণ করেছেন। তরিকুল হুদা টপি এবং মো: তারেক আদালতে অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছিলেন। একটি গুলিভর্তি পিস্তল আলামত হিসেবে জব্দ হয়েছিল। মামলার নথি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ট্রাইব্যুনাল-এর একটি সূত্র জানান, সোমবার দুপুর ১২ টার দিক থেকে আসামি গফফার বিশ্বাসের পরীক্ষা করণের কার্যক্রম শুরু হয়। ট্রাইব্যুনাল এর স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট আরিফ মাহমুদ লিটন তাকে বলেন- আপনি ১৯ জন সাক্ষীর জেরা-জবানবন্দী শুনেছেন, আপনার বক্তব্য কি? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি নিজেকে নির্দোশ দাবি করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তখন বলেন- আপনি কোনো সাফাই সাক্ষী কিংবা কোনো কাগজ-পত্র দাখিল করবেন কিনা? জবাবে আসামি পক্ষের আইনজীবী কোনো সাফাই সাক্ষী উপস্থাপন অথবা কাগজ-পত্র দাখিল করবেন না বলে আদালতকে অবহিত করেন।
এজাহার ও জবানবন্দী থেকে জানা গেছে- ২৫ এপ্রিল, ১৯৯৫। দুপুর প্রায় দু’টা। খুলনা থানার কাছেতম দূরত্বের বেসিক ব্যাংকের ম্যানেজারের সাথে কথা বলে বিদায় নেন আবুল কাশেম। ব্যাংকের সামনের সড়কে তার সুবারো কোম্পানির প্রাইভেট কার, ঢাকা মেট্রো ‘ক’ ০৩-৪৩৭৩। সেখানেই ওৎ পেতে ছিল পাঁচ-ছয় জন ঘাতক। তাদের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র, বয়স ২০ থেকে ৩০। আবুল কাশেম গাড়ীর পেছনের ছিটে উঠে বসার আগেই এক আততায়ী সন্তর্পণে কোমর থেকে কাটা রাইফেল বের করে ওই গাড়ীর পেছনে অবস্থান নেয়। গাড়ীর পেছনের গøাস থেকে ইঞ্চি খানেক দূরত্বে আগ্নেয়াস্ত্রের নল রেখে শ্যুটার গুলিবর্ষন শুরু করে। কয়েকটি বুলেট গাড়ীর কাঁচ ছিদ্র করে কশেমের পিঠে বিদ্ধ হয়। ঘাতকদলের আরেক সদস্য ড্রাইভার মিকাইলের কোমর ও পিঠে গুলি করে। এরপর তারা গুলি করতে-করতে পিকচার প্যালেস সিনেমা হলের সামনের সড়ক দিয়ে চলে যায়। পরবর্তিতে পুলিশ গুরুতর জখম দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত বলে ঘোষনা করেন। অকুস্থল থেকে তিন রাউÐ রাইফেলের গুলির খোসা আলামত হিসেবে জব্দ হয়েছিল। ওই জোড়া খুনের ঘটনায় নিহত কাশেমের কাছে আত্মীয় মো: আলমগীর খুলনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।