করোনা মহামারির মধ্যেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আয় করেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। ২০২০-২১ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৯ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব অর্জন করেছে সংস্থাটি।
রোববার (০৪ জুলাই) বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা সংবাদ সম্মেলন করে জানান, বিদায়ী অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৯৭০ টি জাহাজ আগমনের ফলে এই রেকর্ড করে বন্দরটি। এ সময়ে মোংলা বন্দরে রেকর্ড পরিমাণ পণ্য ওঠানামা হয়েছে। গেল অর্থ বছরে ১১৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ পণ্য খালাস করেছিল। যা থেকে বন্দর নীট মুনাফা আয় করে ১৩০ কোটি টাকা। এটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৯ কোটি টাকা বেশি।
বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) মোস্তফা কামাল বলেন, ২০২০-২১ অর্থ বছরে বন্দরে আগত ৯৭০ টি জাহাজ থেকে ১১৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ পণ্য খালাস হয়। এছাড়া ৪৩ হাজার ৯৫৯ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় এবং ১৪ হাজার ৪৭৪ টি রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি হয়। তবে এসব গাড়ির ৪০ শতাংশ খালাসও হয়েছে বলে দাবি করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। গেল ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এই বন্দরে জাহাজ এসেছিল ৯১২টি। করোনার শুরুর বছর ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৯০৩টি জাহাজ আসে।
তিনি বলেন, ১৯৫০ সালে মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার পর ২০২০-২১ অর্থ বছরের জাহাজের সংখায় নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। যা কোনও বছরেই এত জাহাজের সংখ্যা হয়নি। করোনার ধাক্কা সামলিয়ে এ বন্দরের অর্থনৈতিক চাকা সচল রেখেছেন তারা। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের ৯১২টি জাহাজ থেকে মোংলা বন্দরের আয় হয়েছে ৩২৯ কোটি ১২ লক্ষ এবং ২০১৯-২০ অর্থ বছরের ৯০৩ টি জাহাজ থেকে আয় হয়েছে ৩৩৮ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। এ অর্থ বছরে আয় হয়েছে ৩৪০ কোটি টাকা, ব্যয় ২১০ কোটি টাকা।
তিনি আরও বলেন, “করোনার কোন প্রভাই পড়েনি দেশের এই সমুদ্র বন্দরে। সারাদেশের ব্যবসা বাণিজ্য আংশিক স্থবির থাকলেও মোংলা বন্দরে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক ছিল। ২৪ ঘন্টাই চলমান ছিল এ বন্দরের কার্যক্রম।”
করোনা কালীন সময়ে নয়টি মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে জানিয়ে এদিন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, বন্দর উন্নয়নে মাস্টার প্লান তৈরির কাজ চলছে এবং এটি বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দর দেশের অর্থনীতি ও আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে ব্যপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। একই সাথে চলতি অর্থ বছরে এই বন্দরে এক হাজারেরও অধিক জাহাজ আগমনসহ ৩৬০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন,হারবার ও মেরিন ক্যাপ্টেন এম আবদুল ওয়াদুদ তরফদার, পরিচালক (প্রশাসন) মো. শহিনুর আলম, হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন, প্রধান অর্থ ও হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মো. সিদ্দিকুর রহমান, পরিকল্পনা প্রধান জহিরুল হক, পরিচালক (ট্রাফিক) মোস্তফা কামাল, উপ প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুর রহমান মিনা ও বন্দর চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব মো. নিয়ামুর রহমান প্রমুখ।