একটি দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো তৈরি হয়েছে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবনের। যা এতদাঞ্চলের সাংস্কৃতিক কর্মীসহ সকলের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি আমাদের দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন। এজন্য তাঁকে আমরা ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সেই সাথে দাবি করছি নির্মাণ কাজে এখনও যে ত্রূটিগুলো রয়েছে সেগুলো দ্রুততার সাথে দুরিভ‚ত করা হোক। কথাগুলো বলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট খুলনা জেলার সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সেলিম।
শরিফুল ইসলাম সেলিম দীর্ঘদিন ধরে খুলনার সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে সরাসরি যুক্ত। একজন মাঠের সাংস্কৃতিককর্মী হিসেবেও তিনি বহুল পরিচিত। নাটকের বিষয়গুলো তিনি মনেপ্রাণে ধারণ ও লালন করেন। মঞ্চ নাটক তৈরি, নির্দেশনা ও অভিনয় সবই তিনি করে যাচ্ছেন কয়েক দশক ধরে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা ও নাটক মঞ্চায়নের পরিবেশও তিনি রপ্ত করেছেন আগেই। ফলে তিনিও অনুভব করেছিলেন একটি সাংস্কৃতিক ভবনের। সেজন্য জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা আন্দোলনে অনেকের সাথে তিনিও ছিলেন প্রথম কাতারে। ছিলেন জেলা শিল্পকলা একাডেমির নিবার্হী কমিটির নির্বাচিত সদস্য। বর্তমানে তিনি জেলা শিল্পকলা একাডেমির ফিল্ম সোসাইটির মূখ্য সম্পাদক। তাই নতুন ভবনটি তৈরির শুরু থেকে সবকিছু অবলোকন করেছেন খুব কাছে থেকে।
তিনি জন্মভ‚মিকে বলেন, শিল্পকলা একাডেমি কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পথে। কিন্তু শীতাতপযন্ত্র স্থাপন, আলোক নিয়ন্ত্রণসহ কিছু কারিগরি বিষয়ে অসম্পূর্ণতা রয়েছে। উপরন্তু এই কমপ্লেক্স ভবনটি দেখাশোনা, রক্ষাবেক্ষণ, বিদ্যুৎ খরচসহ আনুসঙ্গিক খরচ কোথা হতে নির্বাহ হবে, তার সুস্পষ্ট কোন নির্দেশনাও নেই। ফলে ভবনটি উদ্বোধন হওয়ার পর এর ব্যবহার, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালন ব্যয় নিয়ে সংকট তৈরি হতে পারে। এতে শিল্পকলা একাডেমি কমপ্লেক্স ভবনের উদ্দেশ্যই ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া নাটক করার জন্য সে সকল জোন থাকার কথা সেগুলো অনেকটাই অবর্তমান। গ্রীনরুমে ও লাইটরুমের সাথে শব্দযন্ত্রের কোন সংযোগ নেই। মূল স্টেজের সামনের যে পর্দাটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটির রং দেওয়া হয়েছে সবুজ, যা মোটেই উপযোগী নয়। এটি সবসময় কালো কিংবা ছাই রংয়ের হওয়া বাঞ্ছণীয়। আর তা না হলে দর্শকদের সামনের দিকে তাকাতে সমস্যা হবে।
তিনি আরও জানান, আধুনিক আলো ও শব্দ প্রক্ষেপণযন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে, কিন্তু তা পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবল নেই। তাই চালু হওয়ার পূর্বে এসব জনবল কাঠমো তৈরি না হলে উন্নত ও দামি যন্ত্রপাতি অচিরেই নষ্ট হয়ে যাবে কিংবা অব্যবহৃত থেকে যাবে। সেকারণে একদিকে যেমন নির্মাণ ত্রæটিগুলো ঠিক করা প্রয়োজন, অপরদিকে টেকনিক্যাল ও দক্ষ জনবলের নিয়োগ দিতে আমার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। এর ব্যাত্যয় ঘটলে খুলনার মানুষের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল হাতে পেয়েও সঠিক কাজে লাগাতে পারবে না। সুদূরপ্রসারি নেতিবাচক একটি প্রভাব পড়বে সাংস্কৃতিক কর্মকাÐে বলেও তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন একটি জেলা শিল্পকলা একাডেমি চালানোর জন্য প্রতি বছর যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ থাকে সেই অর্থ দিয়েও এধরনের কমপ্লেক্স চালানো সম্ভব হবে না।